Pages

দাজ্জাল সম্পর্কে জানুন


দাজ্জাল সম্পর্কে জানুনঃ
. দাজ্জাল কে?
. দাজ্জালকে আমরা চিনবো কিভাবে?
. দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচার উপায় কি?

কেয়ামতের আগে দুনিয়ার সমস্ত মানুষকে আল্লাহ দাজ্জালকে দিয়ে পরীক্ষা করবেন যে ঈসা (আঃ) এর মতো অলৌকিক কাজ করে দেখাবেএই জন্য তাকে বলা হয় মাসীহিদ-দাজ্জাল” অর্থাৎ প্রতারক বা মিথ্যা মাসীহ

দাজ্জালের পরিচয়ঃ
দাজ্জাল একজন তরুন মানুষ যার গায়ের রঙ হবে লালচে। তার চুল হবে ঘন কোঁকড়ানো। তার কপাল হবে চওড়া বুক হবে প্রশস্ত। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলোতার ডান চোখ হবে কানা আর বাম চোখ হবে আংগুরের মতো ফোলাদেখে মনে হবে চোখ যেনো চোখের কোঠর থেকে বের হয়ে আসছে। দুই চোখের ঠিক মাঝখানে লেখাকাফ”, “ফা”, “রা” (كافرঅর্থাৎ কাফের– এই তিনটি অক্ষর লেখা থাকবে যার অর্থ হলো কাফির আর এই লেখা শিক্ষিত-অশিক্ষিত সকল ইমানদারেরাই পড়তে পারবে
দাজ্জালের আরেকট বৈশিষ্ট্য হবে তার কোনো ছেলে মেয়ে থাকবেনা বা সে হবে নিঃসন্তান
দাজ্জাল প্রথমে নিজেকে মাসীহ” বা ঈসা (আঃ) এর মতো অলৌকিক ক্ষমতার দাবী করবেআর পরে সে নিজেক সরাসরি আল্লাহ” হিসেবে দাবী করবে। কারণসে আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী (যাতে মানুষকে পরীক্ষা করা যায়) অনেক অলৌকিক কাজ করে দেখাবে। সে আকাশের মেঘকে হুকুম করবে আর আল্লাহর ইচ্ছায় বৃষ্টি হবেআর যে এলাকার মানুষ তাকে আল্লাহ হিসেবে মানবেনা সেখানে বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে দুর্ভিক্ষ হবে
দাজ্জালের অন্য অলৌকিক কাজের মধ্যে থাকবে তার সাথে রুটির পাহাড় পানির নহর থাকবে যা সে মানুষের মাঝে বিতরণ করবে
সে মৃত মানুষকে জীবিত করে দেখাবেসে একজনকে বলবে আমি আল্লাহ আমাকে মানো। এর প্রমান হিসেবে সে একটা জিনকে তার বাবা মার সুরতে হাজির করবে আর জিন তার বাবা মা সেজে বলবে – দাজ্জালই হচ্ছে আল্লাহতাকে আল্লাহ বলে মেনে নিতে বলবে
দাজ্জাল কখন আসবে?
এক হাদীসে বলা হয়েছেমানুষ যখন দাজ্জাল নিয়ে আলোচনা করবেনা তখন দাজ্জাল আসবে
অর্থাৎ মানুষ যখন দাজ্জাল নিয়ে কথা বলবেনাখতিব সাহবেরা মসজিদে খুতবা দেবেনাআলেমরা তাকে নিয়ে ওয়াজ করবেনা বা বই লিখবেনা। আর মানুষ তখন জানবেনা যে দাজ্জাল নামক একজন মানুষ একটা বড় ফেতনা সৃষ্টি করবে। আর তাই অজ্ঞ মানুষেরা খুব সহজেই দাজ্জালের ফেতনায় ঈমান হারিয়ে চির জাহান্নামী হবে (নাউযুবিল্লাহ)

দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকার উপায়?
দাজ্জাল কখন আসবে কেউ জানেনাহতে পারে কালকে সকালেই দাজ্জাল চলে আসতে পারে আবার হতে পারে এক হাজারদুই হাজার বছর পরে আসবে। তবে কেয়ামতের পূর্বে বহু ছোটো নিরর্দশন ইতিমধ্যেই দেখা যাওয়ায়সমস্ত আলেমরাই এখন মানুষকে সতর্ক করছেন – দাজ্জাল আসার সময় খুব কাছে চলে আসছে। তাই আমাদেরকে সতর্কতা নিতে হবে এর ফেতনা সম্পর্কে। সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত যে মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। এছাড়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর শেখানো,নামাযের শেষে দাজ্জালের ফেতনা থেকে আশ্রয় চাওয়ার দুয়া করতে হবে
সর্বশেষঈসা (আঃ) দুনিয়াতে আবার আসবেন এবং তিনি তীরবিদ্ধ করে দাজ্জালকে হত্যা করবেন


দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচার জন্য দুয়াঃ
. সালাম ফেরানোর পূর্বে দুয়া মাসুরাঃ
৪টি জিনিস থেকে আশ্রয় চাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দুয়া মাসুরা আছে। কবরের আজাবজাহান্নামের আজাব,দুনিয়ার ফেতনা মৃত্যুর সময়ের ফেতনা দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকার জন্য দুয়া মাসুরাঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এইগুলো থেকে বাঁচার জন্য ফরযনফল বা সুন্নতযেকোনো সালাতে তাশাহুদ দুরুদের পরে সালাম ফিরানোর আগে এই দুয়া পড়তে বলেছেন
        اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ، وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ.
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী উযুবিকা মিন যাবিল ক্বাবরি ওয়া মিন যাবি জাহান্নামওয়ামিন ফিতনাতিল মাহইয়াওয়াল্ মামাতিওয়ামিং সাররি ফিতনাতিল্ মাসীহিদ্-দাজ্জাল

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে কাবরের আযাব থেকে রক্ষা করো,আমাকে জাহান্নামের আযাবএবং দুনিয়ার ফিৎনা মৃত্যুর ফেতনা এবং দাজ্জালের ফিৎনা থেকে রক্ষা করো
বুখারী ২১০২মুসলিম /৪১২হিসনুল মুসলিমপৃষ্ঠা ৯০
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) দুয়া মাসুরা হিসেবে এই দুয়া পড়তে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন

. সুরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত করাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত করবে সে দাজ্জালের হাত থেকে রক্ষা পাবে।” অন্য এক হাদীসে আছে,“সুরা কাহফের শেষ দশ আয়াত।
সহীহ মুসলিমরিয়াদুস স্বালেহীনঃ ১০২১
দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচার জন্য সুরা কাহফের প্রথম বা শেষের ১০ আয়াত মুখস্থ করার কথা হাদীসে এসেছে,দুইটা হাদীসই সহীহ। যার যেই আয়াত ভালো লাগেপ্রথম বা শেষের যেকোন ১০ আয়াত মুখস্থ করলেই হবে। 

দাজ্জাল সম্পর্কে বিভ্রান্তিঃ

হিযবুত তাওহীদবায়েজীদ খান পন্নীমাওলানা মওদুদী (রহঃ)ইমরান নযর হোসাইন সহ বিভিন্ন দল এবং লোকেরা দাজ্জালের ব্যপারে মারত্মক অপব্যখ্যার শিকার হয়েছেন। হিযবুত তাওহীদবায়েজীদ খান এদের মতো বিভ্রান্ত লোকেরা দাজ্জালের অর্থ করেছে ইয়াহুদী খ্রীস্টান এবং তাদের মিডিয়াগুলোকে। এরা নির্বোধ লোকযারা হাদীস সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখেনা। মাওলানা মওদুদী (রহঃ) অজ্ঞতাবশত দাজ্জালকে নিছক কল্প-কাহিনী বলে ফতোয়া দিয়েছিলেন (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক)এবং সম্পর্কিত অসংখ্য সহীহ হাদীস সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করেছিলেনআল্লাহ তাকে মাফ করুন। অনুরূপভাবে দাজ্জালের ব্যপারে ইমরান নজর হোসাইন ভুল অর্থ করেছেন। আপনারা হক্ক বাতিল যাচাই করতে চাইলে শুধুমাত্র সহীহ বুখারী সহীহ মুসলিমে দাজ্জাল সম্পর্কিত সহীহ হাদীসগুলো পড়ুনইন শা আল্লাহ এতোটুকুই যথেষ্ঠ হবে



1 comment:

  1. কোরানের কোন সূরার কোন আয়াতে দাজ্জাল সম্পর্কে বলা হয়েছে?

    ReplyDelete